২৮ কেজি গাঁজা হয়ে গেল ৭ কেজি, উদ্ধারকারী পুলিশ কর্মকর্তা প্রত্যাহার

গণমঞ্চ নিউজ ডেস্ক –

নাটোরের বড়াইগ্রামে ১৪টি প্যাকেটে মোড়ানো ২৮ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হলেও থানায় সাত কেজি উল্লেখ করা হয়। এ বিষয়টি আলোচনার পর উদ্ধারকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রাজ্জাককে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

বুধবার (৩ আগস্ট) দুপুরে বড়াইগ্রাম-লালপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শোভন চন্দ্র হোড় এ তথ্য জানান। গাঁজা উদ্ধারকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রাজ্জাক বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কর্মরত ছিলেন।

গতকাল মঙ্গলবার রাত দেড়টার দিকে উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের ছাতিয়ানগাছা মোল্লাপাড়া মোড় থেকে কালো পলিবস্তায় রাখা ১ বস্তা গাঁজাসহ কাভার্ড ভ্যান আটক করে পুলিশ। রাতেই জনসমক্ষে পলি বস্তাটি খোলা হলে সেখান থেকে গাঁজাভর্তি পলিথিনের ১৪টি প্যাকেট গুনে গুনে পুলিশ জব্দ করে। 

আজ সকালে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম সারোয়ার হোসেনকে মোবাইল ফোনে সাংবাদিকদের জানান, সাত কেজি গাঁজাসহ কাভার্ড ভ্যান আটক ও চালককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

বাকি গাঁজা কোথায়—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, উদ্ধারকারী কর্মকর্তা এসআই আব্দুর রাজ্জাক ১৪টি পলিথিনের প্যাকেটে (প্রতিটিতে ৫০০ গ্রাম) মোট ৭ কেজি গাঁজা থানায় জমা দিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, গাঁজার পরিমাণে গরমিল খুঁজে পাওয়ায় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আব্দুর রাজ্জাককে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করেছেন। 

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুল ইসলাম জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে ছাতিয়ানগাছা মোল্লাপাড়া মোড়ে একটি নীল রঙের কাভার্ড ভ্যান (ঢাকা মেট্রো-ন-২৩-৩৬৯৬) থেকে দুজন লোক একটি বড় পলিবস্তা নামাচ্ছিলেন। দেখতে পেয়ে এলাকাবাসী চোর সন্দেহে ধাওয়া দিলে তারা বস্তা ফেলে পালিয়ে যায়। তবে কাভার্ড ভ্যানসহ চালককে আটক করে গ্রামবাসী।পরে পুলিশকে খবর দিলে বনপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই আব্দুর রাজ্জাক ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে ২৮ কেজি গাঁজা ও বহনকারী কাভার্ড ভ্যান জব্দ করে এবং চালককে আটক করে।

ছাতিয়ানগাছা গ্রামের নজরুল ইসলাম ও মুস্তাক হোসেন বলেন, ‘আমরা নিজেরাই গুনে ১৪টি পলিথিনের ব্যাগভর্তি গাঁজা পুলিশকে বুঝিয়ে দিই। প্রতিটি পলিথিনের ব্যাগ দুই কেজির কম হবেই না। এ ক্ষেত্রে ১৪টির মোট ওজন হবে কমপক্ষে ২৮ কেজি।’

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, কোনোভাবেই ৩০ কেজির কম হবে না।অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমরা দাঁড়িপাল্লা এনে মাপতে চাইলে ওই উপপরিদর্শক মাপতে দেননি। এখন শুনছি সেখানে মাত্র সাত কেজি গাঁজা জব্দ দেখানো হয়েছে। আমরা এ ঘটনায় খুবই বিস্মিত হয়েছি।’ 

উদ্ধার করা গাঁজার পরিমাণ নিয়ে এসআই আব্দুর রাজ্জাকের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।  

বড়াইগ্রাম থানার ওসি গোলাম সারোয়ার হোসেন জানান, এ ব্যাপারে চালকসহ ৩ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করা হয়েছে। 

আসামিরা হলেন লালমনিরহাটের সিংগাদার গ্রামের রশিদ মন্ডলের ছেলে চালক সায়েম মন্ডল (৩৪), নাটোরের বড়াইগ্রামের ছাতিয়ানগাছা গ্রামের পিয়ার আলীর ছেলে মাদক কারবারি আশরাফ আলী (৪৫) ও লালপুরের গোধরা গ্রামের কৈয়রা প্রামাণিকের ছেলে ফয়েজুল্লাহ প্রামাণিক (৪৮)। চালককে গ্রেপ্তার দেখিয়ে নাটোর জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অপর দুই আসামি পলাতক রয়েছেন।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *