স্ত্রী ভাড়া পাওয়া যায় যে দেশে

গণমঞ্চ ডেস্ক নিউজ

বিয়ে এমন এক অনুষ্ঠান যা দুটি মানুষ এবং তাদের পরিবারকে এক করে। এমন এক সম্পর্কের বাঁধন যা দম্পতিকে ভালোবাসা এবং অঙ্গীকারে বেঁধে রাখে। বিভিন্ন দেশে বিয়ের আচার-অনুষ্ঠানও আলাদা। বিয়েকে সাধারণত ভালোবাসা, বিশ্বাস এবং বোঝাপড়ার ভিত্তির ওপর তৈরি একটি বন্ধন হিসেবে দেখা হয়। তবে এমন এক দেশও পৃথিবীর বুকে রয়েছে যেখানে ভাড়ায় পাওয়া যায় ‘স্ত্রী’। 

শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ভারতীয় সংবাদ আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

দেশটির নাম থাইল্যান্ড। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সেই দেশ মনোরম সমুদ্রসৈকত এবং প্রাণবন্ত রাত্রিজীবনের জন্য বিশ্ববিখ্যাত। প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক সে দেশে ঘুরতে যান।

তবে সম্প্রতি একটি বইয়ে দাবি করা হয়েছে থাইল্যান্ডে ‘স্ত্রী’ ভাড়ায় পাওয়া যায়। ল্যাভার্ট এ ইম্যানুয়েলের লেখা ‘তাই ট্যাবু— দ্য রাইজ় অফ ওয়াইফ রেন্টাল ইন মডার্ন সোসাইটি’ বইটিতে বিষয়টি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করা হয়েছে।

বইটিতে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, নিজেদের এবং পরিবারের ভরণপোষণের জন্য এই কাজটি বেছে নেন থাইল্যান্ডের দরিদ্র পরিবারের নারীরা। এই নারীরা সাধারণত বার বা নাইটক্লাবে কাজ করেন।

সেখানে তারা বিদেশি পর্যটকদের সঙ্গে দেখা করেন।
ওই বই অনুযায়ী, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য পর্যটকদের সঙ্গে ‘ভাড়ার স্ত্রী’ হিসেবে বসবাস করেন ওই নারীরা। যদি পর্যটকদের কোনো নারীকে মনে ধরে, তখন তাকে বিয়ে করার বিকল্পও রয়েছে।

ইম্যানুয়েলের লেখা অনুযায়ী, স্ত্রী ভাড়া করার এই প্রবণতা বেশি রয়েছে থাইল্যান্ডের পাটায়াতে। স্থানীয়ভাবে ‘ব্ল্যাক পার্ল’ নামেও পরিচিত ‘স্ত্রী’ ভাড়া করার বিষয়টি।

এই ব্যবস্থায় একজন নারীর অর্থের বিনিময়ে অস্থায়ীভাবে কোনো পুরুষকে ‘স্ত্রী’ হিসেবে সঙ্গ দেন। ভাড়াটে স্বামীর জন্য রান্না করা থেকে শুরু করে বাইরে ঘুরতে যাওয়া—সবই করেন ভাড়াটে স্ত্রীরা। এমনকি, একই ছাদের তলায় থাকেনও। পুরো বিষয়টিই নাকি চুক্তিনির্ভর। কোনোভাবেই একে বৈধ বিয়ে হিসেবে বিবেচনা করা হয় না।

ইম্যানুয়েলের বই অনুযায়ী, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্ত্রী ভাড়ার বিষয়টি নাকি পুরোদস্তুর ব্যবসায় পরিণত হয়েছে। অনেক নারীই স্বেচ্ছায় ‘ব্ল্যাক পার্ল’ পরিষেবায় যুক্ত হচ্ছেন।

বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুযায়ী, ‘ব্ল্যাক পার্ল’ পরিষেবার জন্য ১.৩ লাখ টাকা থেকে এক কোটি টাকা পর্যন্ত পেতে পারেন ভাড়াটে স্ত্রীরা।

বিষয়টিকে নিয়ে সমাজের একাংশের কৌতূহল থাকলেও অনেকে আবার সেটির নিন্দা করেছেন। হইচই পড়েছে ইতিমধ্যেই। সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। পুরো বিষয়টির নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বহু মানুষ।

অন্যদিকে বিশেষজ্ঞদের দাবি, থাইল্যান্ডের পরিবর্তিত জীবনধারার কারণে এই প্রবণতা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। একাকিত্ব ওই প্রবণতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। এ ছাড়াও অনেকেই এখন স্থায়ী সম্পর্কগুলির চেয়ে অস্থায়ী সম্পর্ক বেশি পছন্দ করেন। আর সে কারণেই থাইল্যান্ডে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ওই প্রবণতা।

‘স্ত্রী’ ভাড়া করার প্রবণতা এবং এর দ্রুত প্রসারণ নিয়ে নাকি উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সে দেশের সরকারও। ফলস্বরূপ, সরকার এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি আইন বাস্তবায়নের কথা বিবেচনা করছে, যা নারীদের নিরাপত্তা এবং অধিকার নিশ্চিত করবে।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *