সাড়ে পাঁচ বছরে সড়কে ৩৭ হাজার ৩৮২ জনের প্রাণহানি

২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত গত সাড়ে পাঁচ বছরে দেশে ৩৪ হাজার ৮৯৪টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭ হাজার ৩৮২ জন। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন ৫৯ হাজার ৫৯৭ জন। 

রোববার রাজধানীর ডিআরইউ মিলনায়তনে বেসরকারি সংস্থা রোড সেফটি ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থাপনার সংস্কারে রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের রূপরেখা: সরকারের কাছে প্রত্যাশা’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, দেশের সড়ক পরিবহণ খাতে এমন অব্যবস্থাপনা ও নৈরাজ্য সত্ত্বেও অন্তর্বর্তী সরকার সড়ক পরিবহণব্যবস্থা সংস্কারে কোনো কমিশন গঠন করেনি।

সংবাদ সম্মেলনে সড়ক ব্যবস্থাপনা সংস্কারের রূপরেখা উপস্থাপন করেন সংস্থাটির ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. জাহাঙ্গীর।

সড়ক ব্যবস্থাপনা সংস্কারে তিন স্তরের রূপরেখা প্রস্তাব করেছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি- এসব রূপরেখা বাস্তবায়নে বিআরটিএ, বিআরটিসি এবং ডিটিসিএকে একটি কাউন্সিলের অধীন করারও প্রস্তাব দিয়েছে সংস্থাটি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, সড়কে নৈরাজ্যের নেপথ্যে আছে জনসংখ্যার উচ্চ ঘনত্ব, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, দুর্বল ও অপ্রতুল সড়ক অবকাঠামো, সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির ঘাটতি এবং সড়ক ব্যবহারকারীদের অসচেতনতা।এমন বাস্তবতায় রোড সেফটি ফাউন্ডেশন স্বল্পমেয়াদি (২০২৫ থেকে ২০২৭), মধ্যমেয়াদি (২০২৫ থেকে ২০২৯) এবং দীর্ঘমেয়াদি (২০২৫ থেকে ২০৩১) রূপরেখা প্রস্তাব করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, স্বল্পমেয়াদি (২০২৫ থেকে ২০২৭) রূপরেখার মধ্যে আছে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিল (এনআরএসসি) পুনর্গঠন, বিআরটিএ, বিআরটিসি এবং ডিটিসিএর শীর্ষ পদে কারিগরি বিশেষজ্ঞ নিয়োগ, কাঠামোগত সংস্কার, ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষার প্রশ্ন সড়ক-সম্পর্কিত হওয়া, যানবাহনের আয়ুষ্কাল ও ডাম্পিং নীতিমালা তৈরি, সড়ক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য গঠিত ট্রাস্ট ফান্ডে প্রতিবছর সাত কোটি টাকা বরাদ্দসহ ১০টি প্রস্তাবনা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, মধ্যমেয়াদি (২০২৫ থেকে ২০২৯) রূপরেখায় আছে রোড ট্রাফিক সেফটি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (আরটিএমএস) চালুসহ আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার, মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন প্রত্যাহার, রুট রেশনালাইজেশনের মাধ্যমে কোম্পানিভিত্তিক আধুনিক বাস সার্ভিস চালু, স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব বাস ও মোটরসাইকেলের গতি নিয়ন্ত্রণ। আর দীর্ঘমেয়াদি (২০২৫ থেকে ২০৩১) রূপরেখার মধ্যে আছে রাজধানীতে বহুতলবিশিষ্ট হাইড্রোলিক পার্কিং তৈরি, ছোট যানবাহন নিয়ন্ত্রণ, দুর্ঘটনা রোধে সড়ক, রেল ও নৌপরিবহণ একত্র করে অভিন্ন যোগাযোগ মন্ত্রণালয় গঠনের প্রস্তাব।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *