সত্য প্রকাশের প্রতিবাদে উত্তাল ফুলবাড়িয়া: জামিয়া বাহরুল উলূমের মুহতামিমের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অভিযোগে ফুঁসে উঠেছে ছাত্রসমাজ

আশরাফুল আলম, যাত্রাবাড়ী থেকে

ভালুকজান ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামিয়া আরাবিয়া বাহরুল উলূম-এর মুহতামিম আবু হানিফা নোমানের বিরুদ্ধে একাধিক ছাত্রকে বলৎকারের গুরুতর অভিযোগ ওঠার পর থেকেই ছাত্রসমাজ, অভিভাবক ও সচেতন নাগরিকদের মাঝে চরম উত্তেজনা ও ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।

“এই অভিযোগ গুজব নয়” — বলছে আন্দোলনকারী ছাত্ররা

আন্দোলনকারীদের ভাষ্য মতে,

তারা একাধিক নির্ভরযোগ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই অভিযুক্তের বিচার দাবি করছেন

প্রমাণ ধামাচাপা দেওয়ার যে চেষ্টা হয়েছে, তাও ব্যর্থ হয়েছে

সত্য গোপনের সব পথ রুদ্ধ করে আন্দোলন এখন ন্যায়ের পথে দৃঢ়ভাবে অগ্রসর হচ্ছে

তারা স্পষ্টভাবে বলছেন— তারা ব্যক্তিকেন্দ্রিক নন, বরং অপরাধবিরোধী অবস্থান থেকেই মাদ্রাসার সম্মান রক্ষায় মাঠে নেমেছেন।


তদন্ত কমিটির বৈঠক আজ, সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে ছাত্রসমাজ

অভিযোগ ওঠার পর ইতোমধ্যে একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এই তদন্ত কমিটির প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে, যেখানে ঘটনার সত্যতা যাচাই ও সম্ভাব্য পদক্ষেপ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ও সংশ্লিষ্ট সবাই আজকের এই বৈঠকের দিকে গভীর দৃষ্টি রেখে অপেক্ষায় রয়েছেন। তারা বলছেন— যদি সুবিচার না হয়, তবে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।


আন্দোলনকারীদের সুস্পষ্ট অবস্থান

তাদের বক্তব্য:

অপরাধী যেই হোক, তাকে বিচারের মুখোমুখি হতেই হবে

দ্বীনের নামে কোনো অপকর্মকে মাদ্রাসার দেয়ালের আড়ালে রাখা যাবে না

মাদ্রাসার মর্যাদা বাঁচাতে হলে অপরাধীকে সরানোই প্রথম শর্ত


অপপ্রচারের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করছেন, কিছু মহল তাদের আন্দোলনকে “মাদ্রাসা দখলের চক্রান্ত” হিসেবে প্রচার করছে। এই অপপ্রচারকে তারা সরাসরি অস্বীকার করে বলছেন—

“আমরা মাদ্রাসা দখল করতে নয়, বরং মাদ্রাসাকে অপরাধমুক্ত রাখতে রাস্তায় নেমেছি।”


আন্দোলনকারীদের দাবি

১. তদন্ত কমিটির কার্যকর ও স্বচ্ছ রিপোর্ট প্রকাশ
২. দোষী প্রমাণিত হলে আইনের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত
৩. শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও মানসিক সুরক্ষা নিশ্চিত
৪. অপপ্রচার চালানো ব্যক্তিদের প্রকাশ্যে আনা


অঙ্গীকার ও অবস্থান

অন্যায়ের সঙ্গে কোনো আপস নয়

বিচার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে

হকের প্রশ্নে ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকবে

অপপ্রচারের জবাব প্রমাণসহ সাহসিকতার সঙ্গে দেওয়া হবে


আন্দোলনের স্লোগান ও বার্তা

“অপরাধীর কোনো দল নেই, কোনো দ্বীন নেই”

“দ্বীনের পোশাক পরে যারা জুলুম করে, তারা দ্বীনের শত্রু”

“প্রতিষ্ঠানের সম্মান রক্ষা করতে হলে অপরাধীকে সরাতেই হবে”

জামিয়া বাহরুল উলূমের এই ঘটনা শুধুমাত্র একটি মাদ্রাসার বিষয় নয়— এটি গোটা ধর্মীয় শিক্ষাব্যবস্থার পবিত্রতা, নিরাপত্তা এবং নৈতিকতা রক্ষার একটি পরীক্ষা। আজকের তদন্ত কমিটির সিদ্ধান্তই নির্ধারণ করবে, ন্যায়বিচারের পথে সমাজ কতদূর এগোতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *