মিয়া সুলেমান, ময়মনসিংহ থেকে
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সহপ্রধান নিয়োগের ক্ষেত্রে কমিটি গঠনে থাকা দুর্নীতির অভিযোগ ব্যপক। টাকার খেলা নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকার কঠোর অবস্থানে গেছে। প্রতিষ্ঠান প্রধান ও সহপ্রধান পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া গুরুভার এনটিআরসিএ কাঁদে।
সূত্রে জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সহপ্রধান নিয়োগের ক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে অনিয়ম চলে আসছে। কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এমন অভিযোগও উঠেছে যে, যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও ঘুষের বিনিময়ে প্রধান বা সহপ্রধান পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে এনটিআরসিএকে সবধরনের অনিয়ম ঠেকাতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সহপ্রধান নিয়োগের ক্ষেত্রে টাকার বিনিময়ে কোনো ধরনের লেনদেন চলবে না।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রধান ও সহপ্রধান পদে নিয়োগের নীতিমালা প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত নতুন কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা যাবে না। একইসঙ্গে বিদ্যমান নীতিমালায় কিছু অসংগতি থাকায় সেটি সংশোধন করে নতুন নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। নীতিমালা প্রণয়নের জন্য ইতিমধ্যে ১৫ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়েছে।
কমিটির সদস্যরা রয়েছেন– জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর পরিচালক, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, কওমি মাদ্রাসা বোর্ডের প্রতিনিধি, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের প্রতিনিধি, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের প্রতিনিধি, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ), কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব (প্রশাসন), মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের যুগ্মসচিব (বেসরকারি মাধ্যমিক), মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের প্রতিনিধি, বেসরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রতিনিধি, বেসরকারি স্কুল ও মাদ্রাসার প্রধান প্রতিনিধি, শিক্ষক প্রতিনিধি, এবং এনটিআরসিএ সদস্য-পরিচালক (অ্যাডমিন)।
সূত্র জানিয়েছে, যেহেতু এ কমিটিতে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধি রয়েছেন, তাই নতুন নীতিমালা দ্রুতই প্রণয়ন করা সম্ভব হবে।
নতুন নীতিমালায় প্রধান ও সহপ্রধান নিয়োগের ক্ষেত্রে শিক্ষকদের যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, সুনাম, শৃঙ্খলা এবং স্বচ্ছতার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। যাতে করে কোনোভাবেই টাকার প্রভাব না থাকে।
সরকার চায়, যাদের মধ্যে সত্যিকারের নেতৃত্বের গুণাবলি রয়েছে, তারাই যেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান ও সহপ্রধান পদে নিয়োগ পান। এতে শিক্ষার মানোন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
এনটিআরসিএ নিয়োগকৃত ইংরেজি শিক্ষক মিয়া সুলেমান বলেন, “কমিটি নিয়োগে কর্মরতদের বদলির সুযোগ তৈরি করতেই এমন ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যাদের মধ্যে কেউ প্রধান বা সহপ্রধান পদে আসবেন, তারাও ভবিষ্যতে বদলির আওতায় আসবেন।”
সরকার এই বিষয়ে কঠোর অবস্থানে রয়েছে এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নেতৃত্বে সুশাসন নিশ্চিত করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।