যুক্তরাষ্ট্রে স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় দুই শিশু নিহত, আহত ১৭

গণমঞ্চ নিউজ ডেস্ক –

যুক্তরাষ্ট্রের মিনিয়াপলিসে একটি ক্যাথলিক গির্জায় উপাসনারত মানুষের ওপর জানালা দিয়ে এক বন্দুকধারীর চালানো গুলিতে ৮ ও ১০ বছর বয়সী দুই শিশু নিহত এবং আরও ১৭ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

ঘটনাস্থল অ্যানানসিয়েশন গির্জায় একটি স্কুলও রয়েছে। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, স্থানীয় সময় বুধবার এই হামলার সময় গির্জাটি শিক্ষার্থীতে পরিপূর্ণ ছিল। আহত ১৭ জনের মধ্যে ১৪ জনই শিশু, তারা সবাই বেঁচে যাবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হামলাকারীর নাম রবিন ওয়েস্টম্যান, বয়স ২৩ বছর। ঘটনাস্থলেই তিনি নিজের গুলিতে আত্মহত্যা করেন। তার বিরুদ্ধে এর আগে কোনো ‘গুরুতর অপরাধের অভিযোগ’ ছিল না।

পুলিশ চিফ ব্রায়ান ও’হারা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটি ছিল নিরীহ শিশু ও উপাসনারত মানুষদের ওপর পরিকল্পিত সহিংস হামলা।’

হামলার কারণ এখনও জানা যায়নি। এফবিআই পরিচালক কাশ প্যাটেল জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ ও ক্যাথলিকদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক অপরাধ হিসেবে ঘটনাটির তদন্ত করা হচ্ছে।

বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ৮টার ঠিক আগে পুলিশ এই হামলা-সংক্রান্ত ফোন কল পেতে শুরু করে।

হামলাকারী গির্জার একপাশ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র—একটি রাইফেল, একটি শটগান ও একটি পিস্তল ব্যবহার করে জানালা দিয়ে কয়েক ডজন গুলি ছোড়েন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি স্মোক বোমাও উদ্ধার করেছে।

কর্মকর্তারা তদন্ত করে দেখছেন, হামলাকারী ভবনের ভেতরে ঢুকে গুলি করেছিলেন, নাকি সব গুলি গির্জার বাইরে থেকেই করা হয়েছে। তারা জানান, গির্জার ভেতরে গুলির কোনো খোসা পাওয়া যায়নি।

বুধবার সকালে বাড়িতে কাজ করছিলেন গির্জার কাছের বাসিন্দা পি.জে. মাড। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালকে বলেন, ‘আমি “বুম, বুম, বুম” শব্দ শুনতে পাচ্ছিলাম। হঠাৎ বুঝতে পারলাম—ওটা গুলির শব্দ।’

এরপর তিনি গির্জার দিকে দৌড়ে গিয়ে সেখানে গুলির তিনটি ম্যাগাজিন কার্তুজ মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন।

হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া এক ১০ বছর বয়সী এক বালক ডব্লিউসিসিও-কে বলে, এক বন্ধু তার ওপর শুয়ে পড়ে তাকে বুলেট থেকে বাঁচিয়েছে।

সে বলে, ‘আমি স্টেইনড কাচের জানালা থেকে দুটো আসন দূরে ছিলাম। আমার বন্ধু ভিক্টর আমার ওপর শুয়ে পড়ে আমাকে বাঁচিয়েছে, তবে ওর গায়ে গুলি লেগেছে।’

‘আমার বন্ধুর পিঠে গুলি লেগেছে, ওকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে…ওর জন্য ভীষণ ভয় পেয়েছিলাম। তবে আমার মনে হয় ও এখন ঠিক আছে।’

স্কুলটি দক্ষিণ মিনিয়াপলিসের একটি আবাসিক এলাকায় অবস্থিত। ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা এখানে পড়াশোনা করে।

২০১৬ সালের একটি স্কুল নিউজলেটার থেকে জানা যায়, হামলাকারীর মা মেরি গ্রেস ওয়েস্টম্যান আগে এই স্কুলেই কাজ করতেন। ফেসবুকের একটি পোস্ট অনুযায়ী, তিনি ২০২১ সালে চাকরি থেকে অবসরে যান।

পুলিশ জানিয়েছে, হামলার সময় অনলাইনে প্রকাশের জন্য একটি নোট শিডিউল করে রেখেছিলেন সন্দেহভাজন। এফবিআই নোটটি অনলাইন থেকে সরিয়ে ফেলেছে।

গভর্নর টিম ওয়ালজ বলেন, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও তার দল এ ঘটনায় ‘গভীর সমবেদনা’ জানিয়েছেন এবং সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছেন।

পরে ট্রাম্প জানান, নিহত ও আহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হোয়াইট হাউসে মার্কিন পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *