মানবশিশু জন্ম দিতে পারবে রোবট!

গণমঞ্চ ডেস্ক নিউজ

কি হবে যদি মানবশিশু জন্মদিতে পারে রোবট! এটাও কি ভবিষ্যতে সম্ভব? চীনের বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক রোবট প্রতিযোগিতায় কাইওয়া টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা ড. ঝ্যাং ছি-ফেং ঘোষণা দিয়েছে, তারা কৃত্রিম গর্ভ দ্বারা চালিত একটি মানবিক রোবট নিয়ে আসবেন। তারা ধারণা করছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে এই ধরণের রোবটের একটি প্রটোটাইপ নিয়ে আসতে পারবেন। এই প্রযুক্তি বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসা, প্রজনন চিকিৎসা ক্ষেত্রে এক বিশাল মাইলফলক বয়ে আনবেন বলে ধারণা করছেন তারা। এই রোবটের দাম হবে প্রায় ১০ হাজার পাউন্ড (এক লাখ ইয়েন)। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ হবে ১৬ লাখ টাকার কিছু বেশি।

চীনের গুয়াংঝো শহরের কাইওয়া টেকনোলজির প্রতিষ্ঠাতা ড. ঝ্যাং ছি-ফেং জানিয়েছেন, বিশেষজ্ঞরা এমন প্রযুক্তি তৈরি করছেন, যা গর্ভধারণ থেকে শুরু করে সন্তান প্রসব পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াকে অনুকরণ করবে। শিশুটি কৃত্রিম জরায়ুর ভেতর বেড়ে উঠবে এবং একটি টিউবের মাধ্যমে পুষ্টি পাবে। তার দাবি, প্রযুক্তিটি এরই মধ্যেই ‘পরিণত পর্যায়ে’ পৌঁছে গেছে। তিনি বলেন, এটি এখন রোবটের পেটে প্রতিস্থাপন করতে হবে, যাতে একজন বাস্তব মানুষের সঙ্গে রোবটের সংযুক্তির মাধ্যমে গর্ভধারণ সম্ভব হয় এবং ভ্রূণটি ভেতরে বেড়ে উঠতে পারে। ড. ঝ্যাং জানিয়েছেন, ধারণাটি পুরোপুরি নতুন নয়। এর আগে বিজ্ঞানীরা ‘বায়োব্যাগে’ প্রিম্যাচিউর মেষশাবককে কয়েক সপ্তাহ জীবিত রাখতে সফল হয়েছিলেন।

চীনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মানবসদৃশ এই রোবটটি গর্ভধারণ থেকে শুরু করে প্রসব পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটি নকল করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। যদিও শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর নিষিক্তকরণের সুনির্দিষ্ট পদ্ধতি এখনো পরিষ্কার নয়। গর্ভকালীন পুরো সময় শিশুটি রোবটের দেহের ভেতর থাকবে। তবে বিশেষজ্ঞরা এখনো জানাতে পারেননি ভ্রূণটি কৃত্রিম জরায়ুতে কীভাবে প্রতিস্থাপন করা হবে। শিশুটি কৃত্রিম অ্যামনিওটিক ফ্লুইডে থাকবে, যাতে একটি জরায়ুর মতো পরিবেশ তৈরি হয়।

তবে এ উদ্ভাবন নিয়ে এরই মধ্যে আইনগত ও নৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। ড. ঝ্যাং জানান, তিনি গুয়াংডং প্রদেশের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নীতি ও আইন প্রণয়নের খসড়া নিয়ে আলোচনা করেছেন। তবে সমালোচকরা এ প্রযুক্তিকে ‘সমস্যাজনক’ বলে অভিহিত করেন। তাদের মতে, ভ্রূণকে মাতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত করা অনৈতিক ও নিষ্ঠুর।নারীবাদী লেখক আন্দ্রেয়া ডওয়ার্কিন আগেও কৃত্রিম জরায়ু প্রযুক্তির সমালোচনা করেছিলেন। তার আশঙ্কা ছিল, এটি ‘নারীদের অবসান’ ঘটাবে।

যদি এটি সফল হয়, তবে এ প্রযুক্তি চিকিৎসাবিজ্ঞানে বিপ্লব ঘটাতে পারে এবং পরিবার ও প্রজনন নিয়ে মানুষের ধারণা বদলে দিতে পারে। বিশেষ করে চীনে ক্রমবর্ধমান বন্ধ্যাত্বের হার মোকাবিলায় এ প্রযুক্তি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।

সংবাদসূত্রঃ দ্যা ইকোনমিক টাইম্‌স

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *