ভালো স্বামী বানাতে সেনেগালে চালু হয়েছে ‘স্কুল ফর হাসবেন্ডস’

গণমঞ্চ আন্তর্জাতিক ডেস্ক

আফ্রিকার দেশ সেনেগালে জাতিসংঘের উদ্যোগে চালু হয়েছে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ, যার নাম ‘স্কুল ফর হাজবেন্ডস’। এই স্কুলটিতে পুরুষদের একজন সহানুভূতিশীল ও দায়িত্বশীল স্বামী ও বাবা হওয়ার প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এর মূল লক্ষ্য হলো পারিবারিক ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে পুরুষদের ইতিবাচক আচরণে উৎসাহিত করা এবং এর মাধ্যমে মাতৃ ও নবজাতকের মৃত্যুহার কমানো।

এই স্কুলের ক্লাসে ইমাম ইব্রাহীম ডায়ানে ১৪ জন পুরুষকে নিয়ে এক আলোচনায় হাদিসের বাণী উল্লেখ করে বলেন, যে পুরুষ স্ত্রী ও সন্তানদের সাহায্য করে না, সে ভালো মুসলিম হতে পারে না। তিনি নিজের সন্তানকে গোসল করানো এবং স্ত্রীর গৃহকর্মে সহায়তার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাও তুলে ধরেন। পশ্চিম আফ্রিকায় সাধারণত পুরুষরাই পরিবারের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তাই এই উদ্যোগকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

প্রশিক্ষণ গ্রহণের পর ইমাম ডায়ানে জুম্মার খুতবায় লিঙ্গভিত্তিক সহিংসতা, এইচআইভি সম্পর্কিত কুসংস্কার এবং প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করা শুরু করেন। এই উদ্যোগের ফলস্বরূপ পুরুষদের মধ্যে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা গেছে। ৬০ বছর বয়সী হাবিব ডিয়ালো জানান, এই স্কুলের প্রশিক্ষণের পর তিনি তার পুত্রবধূকে হাসপাতালে সন্তান প্রসব করাতে উৎসাহিত করেন, যা তাদের পরিবারে একটি বড় পরিবর্তন এনেছে।

২০১১ সালে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি এখন সেনেগালের নারী, পরিবার, লিঙ্গ ও শিশু সুরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে এবং এটিকে মাতৃ ও নবজাতক মৃত্যুহার কমানোর একটি কার্যকর কৌশল হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ২০টির বেশি কেন্দ্রে ৩০০ জনেরও বেশি পুরুষ প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং তারা পিয়ার এডুকেটর হিসেবে নিজেদের অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন।

জাতিসংঘের লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে মাতৃমৃত্যুর হার প্রতি ১ লাখ জীবিত জন্মে ৭০-এ নামিয়ে আনা এবং নবজাতকের মৃত্যুহার প্রতি ১ হাজারে ১২-র নিচে আনা। ২০২৩ সালে সেনেগালে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ২৩৭ এবং নবজাতকের মৃত্যুহার ছিল ২১। এই স্কুল সেই লক্ষ্য পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

সূত্র: এবিসি নিউজ

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *