গণমঞ্চ ডেস্ক নিউজ
রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আমরণ অনশনরত তিন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থ শিক্ষার্থীদের স্যালাইন দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেই প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার দিকে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৬তম ব্যাচের জাহিদ হাসান জয়, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের ১৪তম ব্যাচের মাহিদুল ইসলাম মাহিদ এবং সাংবাদিকতা বিভাগের ১৪তম ব্যাচের রুম্মানুল ইসলাম রাজ অসুস্থ হয়ে পড়েন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করা হলেও তারা তাতে রাজি হননি। ফলে ক্যাম্পাসেই স্যালাইন দিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলে জানান উপস্থিত চিকিৎসকরা।
এর আগে রাত সাড়ে ১১টার দিকে অনশনরত শিক্ষার্থীদের খোঁজ নিতে ক্যাম্পাসে যান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী, রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ, প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান এবং ছাত্র উপদেষ্টা ইলিয়াস প্রামাণিকসহ একাধিক শিক্ষক। তারা শিক্ষার্থীদের অনশন প্রত্যাহার করে অবস্থান কর্মসূচিতে ফিরে আসার অনুরোধ জানালেও আন্দোলনকারীরা অনশনে অনড় থাকার ঘোষণা দেন।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. শওকাত আলী বলেন, ‘বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ধারা সংযুক্ত না থাকায় বর্তমানে নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে আইনটি সংশোধন করা গেলে চলতি বছরের নভেম্বর মাসের মধ্যেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমি একমত। তবে এই আইন সংশোধনের জন্য রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশ প্রয়োজন, যা একটি সময়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। তবে বিষয়টি যাতে বিলম্বিত না হয়, সেজন্য আমি ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সঙ্গে কথা বলেছি।’
এর আগে রোববার (১৭ আগস্ট) সকাল ১১টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয় আইনে ছাত্র সংসদ নির্বাচন অন্তর্ভুক্ত করা এবং আগামী ২৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রশাসনিক ভবনের উত্তর গেটের সামনে আমরণ অনশনে বসেন। বিকেলের দিকে আরও বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে অনশনে যোগ দেন।
এদিকে আন্দোলনের প্রতি সংহতি জানিয়ে রোববার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচন চাই’, ‘আইন সংশোধন করতে হবে’- ইত্যাদি বিভিন্ন দাবিতে স্লোগান দেন। বিক্ষোভের নেতৃত্ব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিক্ষার্থীরা।
অনশনকারী শিক্ষার্থী ও ‘জুলাই যোদ্ধা’ শামসুর রহমান সুমন বলেন, ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ইতোমধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। আমরা আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে দাবি আদায়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হবে। তা না হলে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকেই নতুন একটি বৃহত্তর আন্দোলনের সূচনা হবে।’