বেইজিংয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর কিমের সব ছাপ মুছে ফেলেছে উত্তর কোরিয়া

গণমঞ্চ নিউজ ডেস্ক –

বেইজিংয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পর কিম জং উনের হাতের ছাপ লেগে থাকা সব জিনিসপত্র সতর্কতার সঙ্গে মুছে দিয়েছেন উত্তর কোরিয়ার কর্মীরা। বিশ্লেষকদের মতে, বিদেশি গুপ্তচরদের ঠেকাতে নিরাপত্তা পদক্ষেপের অংশ হিসেবে এ কাজ করেছেন তারা।

নজর এড়াতে উত্তর কোরিয়ার নেতা দীর্ঘদিন ধরে এ ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে আসছেন।

বুধবার সোশ্যাল মিডিয়া টেলিগ্রামে পোস্ট করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, বৈঠকের পর কিমের দুজন কর্মী সদস্য খুব সতর্কতার সঙ্গে ঘরটি পরিষ্কার করছেন। তারা চেয়ারে পিঠ রাখার স্থান, হাতল, কফি টেবিল মুছে দিচ্ছেন; এমনকি কিমের ব্যবহৃত গ্লাসও সরিয়ে নিচ্ছেন।

ভিডিওটি শেয়ার করেছেন ক্রেমলিনের সাংবাদিক আলেকজান্ডার ইউনাশেভ। তিনি লিখেছেন, “বৈঠক শেষে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিমের উপস্থিতির সব চিহ্ন সতর্কতার সঙ্গে মুছে ফেলছেন তার সঙ্গে থাকা কর্মীরা।”

বার্তা সংস্থা রয়টার্স লিখেছে, দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে কিম ও পুতিন ওই কক্ষে আলোচনা করার পর একসঙ্গে চা খেতে যান এবং উষ্ণভাবে একে অপরকে বিদায় জানান।

দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানের গোয়েন্দা সংস্থার বরাত দিয়ে জাপানের নিক্কেই পত্রিকার খবরে বলা হয়, আগের বিদেশ ভ্রমণের মতো কিম এবারও তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য গোপন রাখার জন্য বেইজিং সফরে নিজের বিশেষ সবুজ ট্রেনেই এসেছিলেন, তাতে ছিল তার ব্যক্তিগত টয়লেট।

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক স্টিমসন সেন্টারের উত্তর কোরিয়ার নেতৃবৃন্দ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ মাইকেল ম্যাডেন জানান, কিমের পূর্বসূরী তার বাবা দ্বিতীয় কিম জংয়ের আমল থেকেই এই ধরনের ব্যবস্থাগুলো স্ট্যান্ডার্ড প্রটোকল হিসেবে কাজ করছে।

ম্যাডেন বলেন, “এই বিশেষ টয়লেট আর সিগারেটের বাট থেকে শুরু করে সব ধরনের বর্জ্য সংগ্রহ করে ব্যাগে ভরে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় যেন কোনো বিদেশি গোয়েন্দা সংস্থা, এমনকি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের হলেও, তার দেহের নমুনা সংগ্রহ করে স্বাস্থ্য তথ্য বিশ্লেষণ করতে না পারে। এমনকী চুল বা আচিল থেকেও তার রোগব্যাধি বা শারীরিক অবস্থার তথ্য জানা সম্ভব।”

এর আগে ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হ্যানয়ে বৈঠকের পরও কিমের প্রহরীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা হোটেল কক্ষ পরিষ্কার করতে দেখা গিয়েছিল। এমনকি বিছানার গদিও সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল।

কিমের দল তিনি বসার আগে বা কোনো জিনিস ব্যবহারের আগে সেগুলোও নিয়মিতভাবে পরিষ্কার করে থাকে। ২০১৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মুন জে-ইনের সঙ্গে বৈঠকের আগে তার প্রহরীরা চেয়ার ও টেবিলে জীবাণুনাশক ছিটিয়ে মুছে দিয়েছিলেন।

২০২৩ সালে পুতিনের সঙ্গে এক শীর্ষ বৈঠকের আগেও কিমের নিরাপত্তা কর্মীরা জীবাণুনাশক দিয়ে চেয়ার মুছেছিলেন এবং মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে সেটি পরীক্ষা করেছিলেন।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *