বিএসসি বনাম ডিপ্লোমা দ্বন্দ্ব ও আলিয়া মাদ্রাসার প্রশাসনিক ক্ষোভ: সমস্যার মূল একই

গণমঞ্চ ডেস্ক নিউজ

দেশে শিক্ষাক্ষেত্রে দীর্ঘদিন ধরে বিরাজমান নানা দ্বন্দ্ব নতুন করে আলোচনায় এসেছে। একদিকে প্রকৌশল খাতে বিএসসি বনাম ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের পদ-পদবি ও প্রোমোশন বিতর্ক, অন্যদিকে আলিয়া মাদ্রাসায় জেনারেল বনাম মৌলভী শিক্ষকদের প্রশাসনিক পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব—উভয় ক্ষেত্রেই ক্ষোভ ও বিভাজন তীব্র আকার ধারণ করছে।

দুটি সমস্যার চরিত্র আলাদা হলেও মিলটি স্পষ্ট—উভয়ের পেছনেই রয়েছে স্বার্থান্বেষী মহলের উসকানি ও বিভ্রান্তিকর প্রচার। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য নির্ধারিত উপ-সহকারী প্রকৌশলী পদ দীর্ঘদিন ধরে কাঠামোগত বাস্তবতার অংশ হিসেবে বিদ্যমান। ২০২৪ সালের পূর্ববর্তী প্রেক্ষাপটে এটি ‘কোটা’ হিসেবে ধরা হলেও, পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এটি আর কোনো কোটা নয়—বরং শিক্ষাগত ও বাস্তব দক্ষতার যৌক্তিক ভিত্তিতে নির্ধারিত পদ। অথচ এই বিষয়টিকে বিকৃত করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে নামানো হচ্ছে। প্রাণনাশের গুজব, অস্পষ্ট অডিও বা পুরনো ভিডিও ভাইরাল করে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা যাচাই-বাছাই ছাড়াই আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ছে, যা রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হয়ে দাঁড়িয়েছে।

একই চিত্র দেখা যায় আলিয়া মাদ্রাসার প্রশাসনিক কাঠামোতে। জেনারেল শিক্ষকেরা অভিযোগ করছেন, তাদেরকে প্রশাসনিক পদে উপেক্ষা করা হচ্ছে। তারা বলছেন, প্রশাসনিক কাজে শিক্ষাগত পার্থক্যের চেয়ে প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতাই মূল। এ অবিশ্বাস ও ক্ষোভ প্রতিদিন বেড়েই চলেছে। এখানেও বিভাজনকে উসকে দিচ্ছে কিছু মহল, যার ফলে সমস্যা সমাধানের বদলে জটিলতাই বাড়ছে।

শিক্ষাবিদরা মনে করছেন, এই দ্বন্দ্বগুলো কেবল শিক্ষার্থীদের বা শিক্ষকদের সীমাবদ্ধ সমস্যা নয়; বরং দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করার বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের অংশ। ২০২৪-পরবর্তী প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে, বৈষম্য নিরসনের প্রশ্নে আর বাহ্যিক উসকানির প্রয়োজন নেই, বরং বিভাজনমূলক প্রচারণাই উত্তেজনা ছড়াচ্ছে। এতে শিক্ষা সংস্কার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং জাতীয় স্থিতিশীলতা হুমকির মুখে পড়ছে।

পর্যবেক্ষকরা স্পষ্ট করে বলছেন—মূল সমস্যাগুলো ঝুলিয়ে রাখলে তা একদিন ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। তাই জরুরি ভিত্তিতে স্বচ্ছ আলোচনার মাধ্যমে বাস্তবসম্মত সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। একইসঙ্গে সামাজিক মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর প্রচার ও রাজনৈতিক নাটক বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *