গণমঞ্চ ডেস্ক
আধুনিক যুগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আমাদের জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠেছে। ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রতিনিয়ত নানা তথ্য, মতামত ও অভিব্যক্তি প্রকাশ করা হচ্ছে।
কিন্তু এই সহজলভ্যতা অনেক সময় হয়ে উঠছে গুনাহর কারণ — বিশেষ করে যখন সেখানে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়, কারো সম্পর্কে ভিত্তিহীন অভিযোগ তোলা হয়, কিংবা ভুয়া ঘটনা সাজিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করা হয়।
বর্তমানে অনেকেই অবচেতনভাবে কিংবা ইচ্ছাকৃতভাবে ফেসবুকে মিথ্যা পোস্ট, গুজব কিংবা অতিরঞ্জিত তথ্য ছড়িয়ে থাকেন।
অনেকে মনে করেন, অনলাইনে দেওয়া একটি পোস্ট হয়তো তেমন কিছু না — কিন্তু ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি অত্যন্ত গুরুতর।
ধর্মীয় বিশেষজ্ঞরা বারবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন, ইসলামে মিথ্যা বলা একটি বড় গুনাহ, এবং এটি শুধু কথায় সীমাবদ্ধ নয় — লিখিত বা ডিজিটাল মাধ্যমেও তা সমানভাবে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়।
ইসলামের দৃষ্টিতে সত্যবাদিতা শুধু একটি নৈতিক গুণই নয়, বরং ঈমানের অংশ। পক্ষান্তরে, মিথ্যা বলা শয়তানের পথ ও জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায় বলে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে কুরআন ও হাদিসে।
সেই অনুযায়ী, ফেসবুক বা যেকোনো সামাজিক মাধ্যমে ইচ্ছাকৃত মিথ্যা তথ্য শেয়ার করাও আল্লাহর কাছে অপছন্দনীয় ও শাস্তিযোগ্য কাজ।
আল্লাহতায়ালা বলেন, অতএব, তোমরা মূর্তির অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকো এবং মিথ্যা কথা বলা থেকে বিরত থাকো। (সূরা হজ্জ: ৩০)
অন্য আয়াতে ইরশাদ হয়েছে, নিশ্চয় মিথ্যা উদ্ভাবন করে তারা, যারা আল্লাহর আয়াতে বিশ্বাস করে না; আর তারাই মিথ্যাবাদী। (সূরা আন-নাহল: ১০৫)
রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, তোমরা সত্যবাদিতা অবলম্বন করো, কারণ সত্য নেকির দিকে নিয়ে যায়, আর নেকি জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। একজন ব্যক্তি ক্রমাগত সত্য কথা বললে এবং সত্যকে অনুসরণ করলে সে আল্লাহর কাছে ‘সিদ্দীক’ (সত্যবাদী) হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়।
আর তোমরা মিথ্যা থেকে দূরে থাকো, কারণ মিথ্যা পাপের দিকে নিয়ে যায়, আর পাপ জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। একজন ব্যক্তি ক্রমাগত মিথ্যা বললে সে আল্লাহর কাছে ‘কাজ্জাব’ (মিথ্যাবাদী) হিসেবে লিপিবদ্ধ হয়। (সহিহ মুসলিম: হাদিস ২৬০৭)