গণমঞ্চ নিউজ ডেস্ক –
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি চাইলে তৎক্ষণাৎ যুদ্ধ বন্ধ করতে পারেন। তবে এজন্য ক্রিমিয়া ফেরত পাওয়ার আশা ও পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে যোগদানের স্বপ্ন ত্যাগ করতে হবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
রবিবার (১৭ আগস্ট) স্থানীয় সময়ে নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেছেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি চাইলে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ শেষ করতে পারেন অথবা লড়াই চালিয়ে যেতে পারেন। মনে রাখুন, এর শুরুটা হয়েছিল কীভাবে। ওবামার আমলে কোনো গুলি ছাড়াই ক্রিমিয়া চলে গিয়েছিল রাশিয়ার দখলে। আর ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। কিছু বিষয় কখনোই বদলায় না!”
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় দেশগুলোর শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকের আগের দিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প স্পষ্ট করে দিয়েছেন, যুদ্ধ বন্ধ করতে হলে জেলেনস্কিকে রাশিয়ার কিছু শর্ত মেনে নিতে হবে।
সোমবার (১৮ আগস্ট) ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে এক বৈঠক করার কথা রয়েছে ট্রাম্পের।
ট্রাম্পের এই মন্তব্যে ইঙ্গিত মেলে যে, সোমবার হোয়াইট হাউসে বৈঠকে জেলেনস্কি প্রবল চাপের মুখে পড়তে পারেন। তিনি যে দুইটি শর্ত উল্লেখ করেছেন তা হলো, ইউক্রেনকে ক্রিমিয়া ছেড়ে দিতে হবে এবং ন্যাটোতে না যোগ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিতে হবে। সেগুলোই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মূল দাবি।
ইউরোপীয় নেতারা আশঙ্কা করছেন, হোয়াইট হাউসের বৈঠকে ট্রাম্প মূলত জেলেনস্কিকে পুতিনের শর্ত মানতে রাজি করানোর চেষ্টা করবেন। তবে তারা একইসঙ্গে জানতে চান, সম্ভাব্য শান্তি চুক্তিতে রাশিয়া কী ধরনের ছাড় দিতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্র ভবিষ্যতে কী ধরনের নিরাপত্তা নিশ্চয়তা দেবে।
এই পোস্ট দেওয়ার এক মিনিট পরই ট্রাম্প আবার লেখেন, “আগামীকাল হোয়াইট হাউসে বড় দিন। একসঙ্গে এত ইউরোপীয় নেতা আগে কখনও আসেননি। তাদের আতিথেয়তা করতে পারা আমার জন্য গর্বের বিষয়।”
এদিকে, দ্য গার্ডিয়ান জানিয়েছে, ট্রাম্পের এ পোস্ট ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করতে পারে। গত ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউসে ট্রাম্প-জেলেনস্কির নজিরবিহীন বাকবিতণ্ডার মতো পরিস্থিতি ফের তৈরি হওয়ার আশঙ্কাও করছেন অনেকে।
তবে জেলেনস্কি আশা প্রকাশ করেছেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় অংশীদারদের সঙ্গে ইউক্রেনের সম্মিলিত শক্তি রাশিয়াকে শান্তির পথে আনতে বাধ্য করবে। বৈঠকে যোগ দিতে তিনি ইতোমধ্যে ওয়াশিংটন পৌঁছেছেন।