তিন মাসের শিশু নিখোঁজ হওয়ার পর লা’শ উদ্ধার, পুলিশ হেফাজতে মা

গণমঞ্চ নিউজ ডেস্ক –

মাদারীপুরের শিবচরে তিন মাসের একটি শিশু নিখোঁজ হওয়ার পাঁচ ঘণ্টা পর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার উপশহর–সংলগ্ন ময়নাকাটা নদী থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। হত্যার অভিযোগে শিশুটির মাকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রহিমা আক্তার (৩২) নামের ওই নারী মানসিকভাবে অসুস্থ। গতকাল বিকেলে তিনি জানিয়েছিলেন, বাজারে যাওয়ার পথে তাঁকে অচেতন করে শিশুটিকে কেউ ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন, শিশুটিকে হত্যা করে নদীতে ফেলে দিয়েছেন। তাঁর তথ্য অনুযায়ী, শিশুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।

রহিমা আক্তার শিবচর পৌরসভার চকবাজার জামে মসজিদের মুয়াজ্জিন রফিকুল ইসলাম স্ত্রী। এই দম্পতির তিন মেয়ে। তাঁরা পৌরসভার ডিসি রোড এলাকায় ভাড়াবাসায় থাকেন।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গতকাল বেলা তিনটার দিকে রহিমা আক্তার তাঁর তিন মাস বয়সী মেয়ে মারিয়াকে কোলে নিয়ে বাসা থেকে বাজারের উদ্দেশে বের হন। এক ঘণ্টা পর তিনি একা বাসায় আসেন। এ সময় বাসার লোকজন মারিয়ার কথা জিজ্ঞাসা করলে রহিমা অসুস্থ ও অচেতন হয়ে পড়েন। চেতনা ফিরলে তিনি জানান, বাজারে যাওয়ার পথে রাস্তায় কেউ তাঁকে অচেতন করে মারিয়াকে ছিনিয়ে নিয়ে গেছে। আর তাঁকে (রহিমা) শিবচর উপশহর এলাকায় রেখে গেছে। শিশুটির পরিবার শিবচর থানার পুলিশে বিষয়টি জানায়। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযানে নামে।

পরে পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রহিমা আক্তার জানান, তিনি শিশুটিকে উপশহর–সংলগ্ন ময়নাকাটা নদীতে ফেলে দিয়েছেন। পুলিশ গতকাল রাত ৯টার দিকে নদী থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করে।

রহিমার স্বামী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমার স্ত্রী প্রায় দুই মাস ধরে মানসিকভাবে একটু অসুস্থ। মারিয়াকে নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়েছিল। পরে সে একা বাড়িতে ফিরে এসেছে। সে একেক সময়ে একেক রকম কথা বলেছে। পুলিশ জানাল, আমার স্ত্রী সন্তানকে নদীতে ফেলে হত্যা করেছে। আমি কীভাবে এ কথা বিশ্বাস করব?’

মাদারীপুর সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) মো. সালাউদ্দিন কাদের বলেন, ‘তদন্তের এক পর্যায়ে শিশুটির মাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তিনি জানান শিশুটিকে উপশহর–সংলগ্ন নদীতে নিজেই ফেলে দিয়েছেন। পরে আমরা নদী থেকে শিশুটির লাশ উদ্ধার করি। তাঁকে (রহিমা) থানায় পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।’

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *