ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি মঙ্গলবার দাবি করেছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আলাস্কায় শুক্রবার নির্ধারিত শান্তি সম্মেলনের আগে “নতুন আক্রমণাত্মক অভিযানের” প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া শুক্রবারের বৈঠকের প্রস্তুতি নিচ্ছে এমন সময়ে সম্মুখসারিতে তীব্র লড়াই এবং দীর্ঘপাল্লার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা অব্যাহত রয়েছে। ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদের ওই বৈঠকে উপস্থিত থাকার সম্ভাবনা নেই, তবে জেলেনস্কির দপ্তরের একটি সূত্র সোমবার এ’বিসি নিউজকে জানায়, “সবকিছুই এখনো অনিশ্চিত।”
বৈঠকের আগে জেলেনস্কি ও তার কর্মকর্তারা কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়িয়েছেন, যাতে সম্ভাব্য শান্তি চুক্তিতে ইউক্রেনের মূল দাবিগুলোর পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন নিশ্চিত করা যায়।
সোমবার জেলেনস্কি বলেন, আলাস্কার বৈঠক সত্ত্বেও পুতিন লড়াই শেষ করতে প্রস্তুত নন।
গোয়েন্দা ও সামরিক কমান্ডের প্রতিবেদন উল্লেখ করে জেলেনস্কি বলেন, “পুতিন নিশ্চিতভাবেই যুদ্ধবিরতি বা যুদ্ধের সমাপ্তির জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন না। তিনি কেবল যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বৈঠককে নিজের ব্যক্তিগত বিজয় হিসেবে দেখাতে চান এবং এরপর আগের মতোই ইউক্রেনের ওপর চাপ বজায় রাখতে চান।”
তিনি আরও যোগ করেন, “এখন পর্যন্ত কোনো ইঙ্গিত নেই যে রাশিয়ানরা যুদ্ধ-পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুতির সংকেত পেয়েছে। বরং তারা সৈন্য ও বাহিনী এমনভাবে পুনর্বিন্যাস করছে যা নতুন আক্রমণাত্মক অভিযানের প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।”
“যদি কেউ শান্তির জন্য প্রস্তুতি নেয়, তাহলে এভাবে কাজ করে না,” বলেন জেলেনস্কি।
জেলেনস্কি স্পষ্ট করেছেন, কিয়েভ কোনো ভূখণ্ড রাশিয়ার কাছে ছাড়বে না, ন্যাটোতে যোগদানের আকাঙ্ক্ষা ত্যাগ করবে না এবং সশস্ত্র বাহিনীর ওপর কোনো সীমাবদ্ধতা মেনে নেবে না।
অন্যদিকে, মস্কোর দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে — ইউক্রেনকে দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে (যার সবগুলো রুশ বাহিনীর নিয়ন্ত্রণে নয়), সেনাবাহিনীর আকার ও সক্ষমতার ওপর স্থায়ীভাবে সীমাবদ্ধতা মেনে নিতে হবে এবং ন্যাটো থেকে স্থায়ীভাবে বাদ দিতে হবে। পুতিন আরও চান, শান্তি চুক্তি হলে রাশিয়ার ওপর সব আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে হবে।
জেলেনস্কির মতে, রাশিয়ার এই দাবিগুলো আসলে “ইউক্রেনকে বিভক্ত করার” চেষ্টা।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোমবার আসন্ন বৈঠককে “অনুভব যাচাইয়ের বৈঠক” হিসেবে বর্ণনা করে সাংবাদিকদের বলেন, “আমি পুতিনের সঙ্গে কথা বলতে যাচ্ছি, এবং আমি তাকে বলব, ‘তোমাকে এই যুদ্ধ শেষ করতে হবে। তোমাকে এটা শেষ করতেই হবে।’”
তিনি আরও বলেন, “এবং ওই বৈঠকের শেষে, সম্ভবত প্রথম দুই মিনিটেই আমি বুঝে যাবো, চুক্তি সম্ভব কি না।”চুক্তি সম্ভব কি না তা কিভাবে বুঝবেন—প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প বলেন, “কারণ আমি এটাই করি। আমি চুক্তি করি।”
সোর্সঃ এবিসি নিউজ