কিশোরগঞ্জের কটিয়াদীতে পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনা ঘটেছে। মেয়েকে তালাক দেওয়ার ক্ষোভে জামাতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের মামলা করেছেন শাশুড়ি পান্না আক্তার। এ ঘটনাকে গ্রামবাসী সাজানো নাটক বলে দাবি করে এর নিন্দা জানিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালে পাঁচগাতিয়া গ্রামের মো. শাহ জালাল (৩৩) ও হৈমি আক্তার (২৫)-এর বিয়ে হয়। বিয়ের পরপরই দাম্পত্য কলহ শুরু হয় এবং হৈমি বাবার বাড়ি চলে যান। ২০২০ সালে কাবিনের টাকা আদায়ে মামলা হলে ২০২২ সালে আদালত শাহ জালালকে ২ লাখ ৩৭ হাজার ৯৭ টাকা পরিশোধের নির্দেশ দেন। তবে মামলা চলাকালীন শাহ জালাল বিদেশ চলে যান।
২০২৫ সালের ১৫ জুলাই দেশে ফেরার পর হৈমি সংসারে ফেরার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও শাশুড়ি পান্না আক্তার কাবিনের টাকা দাবি করে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করেন এবং হুমকি দেন। এরপর ১৭ জুলাই শাহ জালাল স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় ব্যর্থ হয়ে নোটারি মাধ্যমে তালাক দেন।
অভিযোগ অনুযায়ী, তালাকের খবর শোনার পর ক্ষোভে পান্না আক্তার তার মেয়েকে নিয়ে শাহ জালালের বাড়িতে গিয়ে পুলিশ ডেকে ধর্ষণের নাটক সাজান। পুলিশ পরে শাহ জালালকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠায়।
পাঁচগাতিয়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা বৃদ্ধ সেকান্দর আলী বলেন, শাহ জালাল সহজ-সরল ছেলে। বিয়ের কয়েক মাস পর থেকেই স্ত্রী আলাদা থাকে। আমরা বহুবার মীমাংসার চেষ্টা করেছি। এখন তালাকের ক্ষোভে মা-মেয়ে নাটক সাজিয়ে তাকে ফাঁসিয়েছে। আমরা গ্রামবাসী এর তীব্র নিন্দা জানাই এবং তার মুক্তি চাই।
বাদী পান্না আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ও আগে রাজমিস্ত্রি ছিল, গরিব ছিল, তখন আমার মেয়ে ভালো ছিল। এখন বিদেশে গিয়ে টাকা ওয়ালা হয়ে তালাক দিয়েছে। তাকে জেলে পচাবো।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতি মিয়া বলেন, আমরা বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করেছি কিন্তু ব্যর্থ হয়েছি। মামলা হলে আদালতের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
কটিয়াদি মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম বলেন, শাশুড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ শাহ জালালকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলে পাঠিয়েছে।