জাপানে যুক্তরাষ্ট্রের ‘টাইফুন’ ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনে রাশিয়া ও চীনের কঠোর সমালোচনা

গণমঞ্চ নিউজ ডেস্ক –

রাশিয়া ও চীন আলাদাভাবে জাপানকে সতর্ক করেছে দেশটির সিদ্ধান্ত নিয়ে, যেখানে আগামী মাসে যৌথ সামরিক মহড়ার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রকে ‘টাইফুন’ মধ্যপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। দুই দেশই এই পদক্ষেপকে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি বলে আখ্যায়িত করেছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা শুক্রবার বলেন,
“আমরা এটিকে ওয়াশিংটনের আরেকটি অস্থিতিশীল পদক্ষেপ হিসেবে দেখছি, যা স্বল্প ও মধ্যপাল্লার স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্রের সক্ষমতা বাড়ানোর কৌশলের অংশ।”

তিনি আরও জানান, রাশিয়ার সন্নিকটবর্তী অঞ্চলে টাইফুন মোতায়েন “মস্কোর জন্য সরাসরি কৌশলগত হুমকি” তৈরি করছে। জাখারোভা সতর্ক করে বলেন, যদি জাপান সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা না করে, তবে রাশিয়া “প্রয়োজনীয় সামরিক-প্রযুক্তিগত পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।” একইসঙ্গে তিনি জানান, এই পদক্ষেপে আঞ্চলিক পরিস্থিতি অবনতির সম্পূর্ণ দায়িত্ব জাপানকেই বহন করতে হবে।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুও জিয়াকুন শুক্রবার এক বিবৃতিতে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানকে আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতায় অবদান রাখতে হবে, ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের মাধ্যমে সেটিকে দুর্বল করা উচিত নয়।

তিনি আরও বলেন, “চীন সবসময় এশীয় দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের টাইফুন মিড-রেঞ্জ ক্যাপাবিলিটি ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের বিরোধিতা করে এসেছে। আমরা জাপানকে আহ্বান জানাই ইতিহাসের আগ্রাসনের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিতে, শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের পথ অনুসরণ করতে এবং সামরিক ও নিরাপত্তা বিষয়ে সতর্কভাবে পদক্ষেপ নিতে।”

গুও যুক্তরাষ্ট্রকেও সতর্ক করে বলেন, “ওয়াশিংটনকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিতে হবে এবং ভুল পথে না গিয়ে সঠিক পথে আরও বেশি প্রচেষ্টা ও সম্পদ ব্যয় করতে হবে।”

রয়টার্স জানায়, টাইফুন ব্যবস্থা মূলত এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অ্যান্টি-শিপ অস্ত্রভাণ্ডার শক্তিশালী করার অংশ। ২০২৪ সালে ফিলিপাইনে এই ক্ষেপণাস্ত্র প্রথমবারের মতো প্রশিক্ষণ মহড়ায় মোতায়েনের পরই চীন তীব্র সমালোচনা করে। পরবর্তীতে ম্যানিলা ঘোষণা দেয় যে তারা যুক্তরাষ্ট্রের এই স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনবে। বর্তমানে এর পাল্লা প্রায় ৪৮০ কিলোমিটার (প্রায় ৩০০ মাইল), তবে দীর্ঘ-পাল্লার সংস্করণও উন্নয়নাধীন রয়েছে।

জাপানের গ্রাউন্ড সেলফ-ডিফেন্স ফোর্সের এক মুখপাত্র রয়টার্সকে জানান, টাইফুন ক্ষেপণাস্ত্র হোনশু দ্বীপের ইওয়াকুনি শহরে অবস্থিত মার্কিন মেরিন এয়ার স্টেশনে মোতায়েন করা হবে, যা টোকিও থেকে প্রায় ৮৯০ কিলোমিটার পশ্চিমে।

তবে সেপ্টেম্বর ১১ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত চলমান যুক্তরাষ্ট্র ও জাপানের যৌথ মহড়া “রেজল্যুট ড্রাগন”-এর অংশ হিসেবে টাইফুন ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হবে কি না, তা এখনো স্পষ্ট নয়।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *