গণমঞ্চ আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আধুনিক মানুষের প্রজাতি হোমো সেপিয়েন্সদের অস্তিত্ব নিয়ে নতুন এক দাবি করেছেন গবেষকেরা। বলছেন, আগে যেমনটা ধারণা করা হয়েছিল, তার চেয়ে অন্তত পাঁচ লাখ বছর বেশি সময় আগে থেকেই পৃথিবীতে হোমো সেপিয়েন্সদের অস্তিত্ব ছিল। চীনে পাওয়া ১০ লাখ বছরের পুরোনো একটি মাথার খুলি নিয়ে বিশ্লেষণের পর এমন দাবি করেছেন গবেষকেরা। বিবিসি, এএফপি।
গবেষকদের বক্তব্য, এই বিশ্লেষণ মানুষের বিবর্তন সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাকে পুরোপুরি বদলে দিতে পারে। আর তা যদি ঠিক হয়, তবে মানবপ্রজাতির ইতিহাসের গুরত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়কেই নতুন করে লিখতে হবে। গবেষণা সংশ্লিষ্টতার বাইরের অনেক বিশেষজ্ঞও বলছেন, নতুন গবেষণার ফলাফল সত্যি হওয়ার সম্ভাবনা আছে। তবে তা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে আরও অনেক দূর যেতে হবে। বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী ‘সায়েন্স’ এর গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। চীনের একটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের বিজ্ঞানীরাসহ আরও বেশ কয়েকজন গবেষক এ দলে ছিলেন। ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সিজুন নি যৌথভাবে এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন। পুরোনো ওই খুলির নাম দেওয়া হয়েছে ‘ইউনসিয়ান ২’। খুলিটি আবিষ্কারের পর শুরুতে বিজ্ঞানীরা ভেবেছিলেন, এটি প্রাচীনকালের হোমো ইরেকটাস প্রজাতির কোনো মানুষের খুলি হয়তো। হোমো ইরেকটাস হলো প্রথম লম্বা মস্তিষ্কের মানুষ প্রজাতি। হোমো ইরেকটাস প্রজাতি প্রায় ছয় লাখ বছর আগে ধীরে ধীরে বিবর্তিত হয়ে আলাদা দুটি প্রজাতিতে বিভক্ত হয়ে পড়ে। সে দুটি প্রজাতি হলো নিয়ান্ডারথাল ও আধুনিক মানুষের প্রজাতি হোমো সেপিয়েন্স। তবে মাথার খুলিটি নিয়ে নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, এটি হোমো লংগির একটি আদিম রূপ। হোমো লংগি হলো নিয়ান্ডারথাল আর হোমো সেপিয়েন্সের সমপর্যায়ের একটি ঘনিষ্ঠ প্রজাতি। গবেষণার সহপ্রধান এবং ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের অধ্যাপক ক্রিস স্ট্রিংগার বলেন, ‘পৃথিবীর কোথাও ১০ লাখ বছর বয়সি হোমো সেপিয়েন্সের জীবাশ্ম থাকতে পারে, আমরা এখনো এমনটা খুঁজে পাইনি।’ আদিম মানুষের প্রজাতি চিহ্নিত করা এবং তারা কখন পৃথিবীর বুকে পা রেখেছিল, তা বোঝার দুটি উপায় আছে। তা হলো মস্তিষ্কের আকার দেখা এবং জিনগত তথ্য বিশ্লেষণ করা। ইউনসিয়ান ২-এর ক্ষেত্রে দুই পদ্ধতিই ব্যবহার করা হয়েছে। আর দুই পরীক্ষাতেই একই ধরনের ফলাফল পাওয়া গেছে।