গণমঞ্চ নিউজ ডেস্ক –
বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল (AAPL.O) ২০২৬ সালের শেষ নাগাদ যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া আইফোনের বেশির ভাগই ভারতে তৈরি কারখানা থেকে উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে। মূল উৎপাদন ঘাঁটি চীনে সম্ভাব্য শুল্কবৃদ্ধির ঝুঁকি এড়াতেই প্রতিষ্ঠানটির এ পদক্ষেপ।
অ্যাপল ইতিমধ্যেই সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ফক্সকন (Foxconn) এবং টাটা গ্রুপের সঙ্গে দ্রুতগতির আলোচনা শুরু করেছে লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য। তবে অ্যাপল ও ফক্সকন কোনো মন্তব্য করেনি এবং টাটা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে।
প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপল ৬ কোটি’র বেশি আইফোন বিক্রি করে, যার প্রায় ৮০ শতাংশ এখনো চীনে তৈরি হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারতকে স্মার্টফোন উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছেন। তবে মোবাইল যন্ত্রাংশ আমদানিতে অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি শুল্কের কারণে ভারতে উৎপাদন এখনো তুলনামূলক ব্যয়বহুল।
ভারতে আইফোন উৎপাদন ব্যয় চীনের তুলনায় গড়ে ৫–৮ শতাংশ বেশি, আর কিছু ক্ষেত্রে এ পার্থক্য ১০ শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত শুল্ক এড়াতে অ্যাপল ইতিমধ্যেই ভারতে উৎপাদন বাড়িয়েছে। গত মার্চে দেশটি থেকে ৬০০ টন আইফোন, যার মূল্য প্রায় ২ বিলিয়ন ডলার, যুক্তরাষ্ট্রে পাঠানো হয়—যা টাটা ও ফক্সকন উভয়ের জন্যই রেকর্ড। শুধু ফক্সকনই ১.৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের স্মার্টফোন রপ্তানি করে।
গত এপ্রিলে যুক্তরাষ্ট্র ভারত থেকে আমদানিকৃত পণ্যে ২৬ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে, যা সে সময় চীনের পণ্যের ওপর আরোপিত ১০০ শতাংশের বেশি শুল্কের তুলনায় অনেক কম। পরে ওয়াশিংটন বেশির ভাগ দেশের জন্য তিন মাসের জন্য শুল্ক কার্যকর স্থগিত রাখলেও চীনের ক্ষেত্রে তা বহাল রাখা হয়।
বিশ্বের দুই বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ শিথিল করার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন, যা বৈশ্বিক মন্দার আশঙ্কা কিছুটা প্রশমিত করেছে।
চীনের বাইরে উৎপাদন নেটওয়ার্ক বৈচিত্র্যময় করার কৌশলের অংশ হিসেবে ভারতকে এখন গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আনছে অ্যাপল। সরবরাহকারী ফক্সকন ও টাটার বর্তমানে ভারতে তিনটি কারখানা রয়েছে, পাশাপাশি আরও দুটি নির্মাণাধীন।
সুত্রঃ রয়টার্স