গণমঞ্চ নিউজ ডেস্ক –
যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় বিচারক ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তারকা ফ্র্যাঙ্ক ক্যাপ্রিও মারা গেছেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর। পরিবারের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
রোড আইল্যান্ডে চার দশকের বিচারক জীবনে তিনি সহমর্মিতা ও রসিকতার মাধ্যমে এমন সব রায় দিয়েছেন, যেখানে আসামিদের ব্যক্তিগত পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দেওয়া হতো।
তাঁর জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান Caught in Providence–এ আদালতের কার্যক্রমের অসংখ্য ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে এবং বিলিয়ন ভিউ অর্জন করে। এর সুবাদে তিনি ‘বিশ্বের সবচেয়ে দয়ালু বিচারক’ হিসেবে পরিচিতি পান।
অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর মৃত্যু হয়। বিষয়টি জানানো হয় বিচারক ক্যাপ্রিওর অফিসিয়াল ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে, যেখানে তাঁকে স্মরণ করা হয়েছে তাঁর “উষ্ণতা” এবং মানুষের প্রতি “অটল বিশ্বাস”-এর জন্য।
প্রভিডেন্স শহরে হাজারও মামলা পরিচালনা করার পর তিনি টেলিভিশন ক্যারিয়ারে প্রবেশ করেন। আদালতে শিশুদের তাঁর পাশে বসতে দেওয়া থেকে শুরু করে নিজস্ব একটি “মিনি-জাজ” পুতুল বাজারে ছাড়ার মতো ভিন্নধর্মী কর্মকাণ্ড তাঁকে অনন্য করে তোলে।
টিকটকে তাঁর সকালের রুটিন— দাঁত ব্রাশ করা, নিজের বইয়ে স্বাক্ষর করা এবং নিজের শোর ভিডিও দেখা—ভিডিওটি একাই ৫০ লাখের বেশি বার দেখা হয়েছে।
২০১৯ সালের এক সাক্ষাৎকারে ক্যাপ্রিও বলেছিলেন, তাঁর আদালতের কার্যক্রম “রোড আইল্যান্ডের জীবনের একটি প্রতিচ্ছবি, যা দেশের সর্বত্র মানুষের অভিজ্ঞতার সঙ্গেই মিলে যায়।”
তাঁর ছেলে ডেভিড ক্যাপ্রিও ভক্তদের ভালোবাসা ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং সবার প্রতি আহ্বান জানান—“তাঁর স্মৃতিতে সামান্য হলেও দয়া ছড়িয়ে দিন।”
৩৪ লাখ অনুসারীকে দেওয়া এক ইনস্টাগ্রাম বিবৃতিতে বলা হয়, বিচারক ক্যাপ্রিও অসংখ্য মানুষকে দয়ার কাজে অনুপ্রাণিত করেছেন। “তাঁর উষ্ণতা, রসিকতা ও দয়া যাঁরা তাঁকে চিনতেন, তাঁদের হৃদয়ে অমোচনীয় ছাপ রেখে গেছে।”
Caught in Providence অনুষ্ঠানটি চলাকালে তিনটি ডেটাইম এমির জন্য মনোনীত হয়েছিল। শুধু গত বছরই বিচারক ক্যাপ্রিও নিজে দুটি মনোনয়ন পান।
শো–এর প্রযোজক প্রতিষ্ঠান ডেবমার-মারকিউরি তাঁকে স্মরণ করে জানিয়েছে, “সহমর্মিতা ও সাধারণ জ্ঞানের অনন্য সমন্বয়” ছিল তাঁর বিশেষ বৈশিষ্ট্য। কোম্পানির সহ-সভাপতি মর্ট মার্কাস ও ইরা বার্নস্টাইন এক বিবৃতিতে বলেন, “আমরা তাঁকে গভীরভাবে মিস করব।”
২০২৩ সালে অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর তিনি বলেছিলেন, তিনি “শেষ পর্যন্ত লড়ে যাওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত” এবং অনুসারীদের সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞ।
মৃত্যুর আগে শেষ দিকের এক সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পোস্টে তিনি জানিয়েছিলেন, “চিকিৎসয়ায় বাধার সম্মুখীন” হয়ে তিনি আবার হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং অনুসারীদের কাছে প্রার্থনা চেয়েছিলেন।
ফ্র্যাঙ্ক ক্যাপ্রিওর জীবিত আছেন তাঁর স্ত্রী জয়েস ক্যাপ্রিও, যাঁর সঙ্গে প্রায় ৬০ বছরের দাম্পত্য জীবন ছিল। এছাড়া তাঁদের পাঁচ সন্তান, সাত নাতি–নাতনি এবং দুই প্রপৌত্র-প্রপৌত্রী রয়েছে।