গণমঞ্চ নিউজ ডেস্ক –
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার মো. ওসমান গণির বিরুদ্ধে ব্যাপক দুর্নীতি, ঘুষ গ্রহণ ও সরকারি বনজমি ব্যক্তি নামে রেজিস্ট্রির অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ওসমান গণি বন বিভাগের গেজেটভুক্ত জমি অবৈধভাবে ব্যক্তি নামে রেজিস্ট্রি করে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। দলিলের সরকারি ফি’র বাইরে বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা তার নিয়মিত কার্যক্রমে পরিণত হয়েছে। হেবার ঘোষণা, দানপত্র, রিডেম্পশন, মর্টগেজসহ প্রায় সব ধরনের দলিলেই অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা, আবার কিছু দলিলে এক লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দাবি করা হয়।
স্থানীয় দলিল লেখক আদনান ও কয়েকজন অফিস সহকারীর সহযোগিতায় তিনি নিয়মিত ঘুষ লেনদেন করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। দলিল উপস্থাপনের পর প্রথমে ‘এটি বনের জমি, রেজিস্ট্রি করা যাবে না’ বলে ফিরিয়ে দেন তিনি। পরে ঘুষের বিনিময়ে একই দলিল রেজিস্ট্রি করে দেন।
এছাড়া দলিলের নকল কপিতেও বাড়তি অর্থ আদায় করা হয়। প্রতিদিন গড়ে ১০০ কপি নকল দলিল তৈরি হয় শ্রীপুর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে, প্রতিটি থেকে তিনি ৫০০ টাকা করে অবৈধভাবে সংগ্রহ করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এ খাত থেকে দৈনিক প্রায় আড়াই লাখ টাকা আয় করেন তিনি।
ওসমান গণি দেশের বিত্তবান ও প্রভাবশালী সাব-রেজিস্ট্রারদের একজন হিসেবে পরিচিত। অভিযোগ রয়েছে, তিনি কখনও ছোট কোনো স্টেশনে চাকরি করেননি। বরং কেরাণীগঞ্জ, বগুড়া সদর, নরসিংদীর রায়পুরা, চট্টগ্রাম ও সুনামগঞ্জসহ আর্থিকভাবে লাভজনক এলাকাগুলোতে পোস্টিং নিয়েছেন, যা পেতে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেছেন বলে জানা গেছে।
বর্তমানে তার নামে ও বেনামে বিপুল সম্পদের খোঁজ মিলেছে। এর মধ্যে রয়েছে রংপুর শহরে ৩০ কোটি টাকার বহুতল ভবন, ঢাকার উত্তরায় পাঁচতলা বাড়ি, বাড্ডা, ধানমন্ডি ও মোহাম্মদপুরে ফ্ল্যাট, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি। এসব সম্পদের অনেকটাই তার স্ত্রী, পুত্র ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়দের নামে রয়েছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করেছেন, দলিল দাতা ও গ্রহীতাদের নানাভাবে জিম্মি করে ওসমান গণি বছরের পর বছর কোটি কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেছেন। এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।