কেরানীগঞ্জে ‘সন্ত্রাসী’ কালা জরিপের বিচার দাবি, জনপ্রতিনিধির সংবাদ সম্মেলন

ছবি: সংবাদ সম্মেলনে শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. ওহেদুজ্জামান।

কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) সংবাদদাতা

ঢাকার কেরানীগঞ্জকে সন্ত্রাস, মাদক ও চাঁদাবাজির হাত থেকে রক্ষা করতে কুখ্যাত সন্ত্রাসী জরিপ মিয়া ওরফে কালা জরিপের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় এক জনপ্রতিনিধি।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের ইকুরিয়া জমিদারবাড়ি এলাকায় সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানান শুভাঢ্যা ইউনিয়ন পরিষদের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. ওহেদুজ্জামান।

সংবাদ সম্মেলনে জরিপের উত্থান ও অপরাধের ইতিহাস তুলে ধরে তিনি বলেন, জরিপ দুই দশক আগে নিহত সন্ত্রাসী আনসার মিয়ার নেতৃত্বাধীন ‘আনসার বাহিনীর’ সদস্য ছিলেন। আনসার পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ার পর বাহিনীর নেতৃত্ব নেন জরিপ। এরপর থেকে তিনি হত্যা, ধর্ষণ, মাদক ব্যবসা, জমি দখল, মানবপাচার, চাঁদাবাজি ও ডাকাতির মতো অপরাধে জড়িয়ে পড়ে কেরানীগঞ্জে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। বর্তমানে তাঁর নামে বেনামে বিপুল সম্পদ রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে অন্তত ১৫ থেকে ১৬টি মামলা রয়েছে। তার বাহিনী বর্তমানে দেড় শতাধিক সদস্য নিয়ে সক্রিয়। যার মধ্যে কিশোর গ্যাংও রয়েছে। এই বাহিনী পুরো এলাকায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছে। ২০২৩ সালের ১৭ জানুয়ারি কালা জরিপকে তার তিন সহযোগীসহ গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১০। ওই সময় তার কাছ থেকে বিদেশী পিস্তল, মাদক ও বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছিল। গ্রেপ্তার হলেও জামিনে বের হয়ে আবারও জরিপ অপরাধে জড়িয়ে পড়ে।

নিজের অসহায়ত্বের কথা জানিয়ে স্থানীয় সরকারের এই জনপ্রতিনিধি বলেন, আমি ২০০২ সাল থেকে ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছি। দায়িত্ব পালনের কারণে এলাকার বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে আমি সবসময় বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। এজন্য জরিপ আমার প্রতি ক্ষিপ্ত হয়। এ কারণে সে বারবার আমার জমি দখলের চেষ্টা করেছে, চাঁদা দাবি করেছে, এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছে। সম্প্রতি আমার মেয়ের নামে কেনা জমি দখল করতে গেলে আমরা বাধা দিই। তখন আমাকে প্রকাশ্যে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। পরে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছি।

তিনি আরও বলেন, কালা জরিপের ভয়ে মানুষ মুখ খুলতে সাহস পায় না। সবাই তাঁর কাছে জিম্মি হয়ে আছে। আজ আমি সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি যে, জরিপ ও তার বাহিনীকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে কেরানীগঞ্জকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজির হাত থেকে মুক্ত করা হোক।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে জরিপ মিয়ার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও সংযোগ বন্ধ পাওয়া যায়।

দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ মোহাম্মদ আখতার হোসেন বলেন, ওয়ার্ড সদস্য ওহেদুজ্জামান ও জরিপ দুজনই একে অপরের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। তাঁদের জিডি তদন্তের জন্যে আদালতের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জরিপের বিরুদ্ধে কোনো গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে কিনা জানতে চাইলে ওসি বলেন, তাঁর জানা মতে বর্তমানে কোনো মামলায় পরোয়ানা নেই।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *