গণমঞ্চ নিউজ ডেস্ক –
দোহায় ইসরাইলি হামলার পর নীরবতা ভেঙ্গে প্রথমবারের মতো গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের জ্যেষ্ঠ নেতা খালিল আল-হাইয়া।
রোববার ইসরাইলি গণমাধ্যম জেরুজালেম পোস্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর গাজায় মার্কিন প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনার জন্য অনুষ্ঠিত এক বৈঠকের সময় কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের একটি অফিস ভবনকে লক্ষ্যবস্তু করে বিমান হামলা চালায় ইসরাইল। ওই হামলায় ছয়জন নিহত হন, যার মধ্যে ছিলেন সিনিয়র হামাস নেতা খলিল আল-হায়ার ছেলে হুমাম, তিনজন দেহরক্ষী এবং একজন কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা।
এই হামলার প্রায় এক মাস পর রোববার কাতারের সংবাদমাধ্যম আল আরাবিতে আগে রেকর্ড করা এক সাক্ষাৎকারে ইসরাইলের ওই হামলার বর্ণনা দেন এবং নিহতদের কথা উল্লেখ করেন।
এ সময় দোহায় ইসরাইলি হামলায় নিহত তার ছেলে ও সহকর্মীদের জন্য শোক প্রকাশের পাশাপাশি তিনি জোর দিয়ে বলেন, ব্যক্তিগত বেদনা ফিলিস্তিনি জাতির সম্মিলিত ত্যাগ থেকে আলাদা নয়।
আল-হাইয়া বলেন, ‘আজ আমরা যন্ত্রণা ও গৌরব—দুয়ের ছায়াতেই বাস করছি।’
তিনি বলেন, তিনি নিজের পরিবারের সদস্যের মৃত্যু আর গাজায় নিহত হাজারো ফিলিস্তিনির মৃত্যুর মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমি আমার সন্তান ও গাজায় দখলদার বাহিনীর হাতে নিহত কোনো ফিলিস্তিনি শিশুর মধ্যে কোনো পার্থক্য করি না।’
আল-হাইয়া উল্লেখ করেন, এসব ক্ষয়ক্ষতির পেছনে একটিই মূল কারণ— দখলদার ইসরাইলের অব্যাহত অপরাধ।
তিনি তার ছেলেসহ নিহতদের শহিদ আখ্যা দিয়ে বলেন, তাদের রক্তই ‘মুক্তির পথ প্রশস্ত করছে।’
তিনি আরও বলেন, গাজার ধৈর্য ও দৃঢ়তা জাতীয় ও ঐতিহাসিক সংগ্রামের প্রতীক।
হামাসের এই জ্যেষ্ঠ নেতা বলেন, ‘আমরা এই বৃহৎ পরিবারের অংশ — ফিলিস্তিনি জাতির পরিবার, বিশেষ করে গাজার মানুষ, যারা আজ তাদের সংগ্রাম, ধৈর্য ও ত্যাগের মাধ্যমে গোটা জাতিকে প্রতিনিধিত্ব করছে— এমন ত্যাগ যা ইতিহাসে বিরল।’
বক্তব্যে আল-হাইয়া ‘শতবর্ষেরও বেশি সময় ধরে চলা ফিলিস্তিনের সংগ্রাম’-এর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বলেন, বর্তমান যুদ্ধ সেই দীর্ঘ ঐতিহাসিক লড়াইয়েরই ধারাবাহিকতা, যা ইসরাইলি ও পশ্চিমা ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে চলছে।
উল্লেখ্য, কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতায় চলমান যুদ্ধবিরতি আলোচনায় হামাসের প্রতিনিধি দলের প্রধান আল-হাইয়া ।