আবারও বড় পর্দায় জনপ্রিয় স্পাই চরিত্র জেসন বোর্ন!

গণমঞ্চ নিউজ ডেস্ক –

যদি প্রশ্ন করা হয়, জনপ্রিয় চরিত্র জেসন বোর্নের কাহিনী ঠিক কোথায় শেষ হলো, তার উত্তর একেকজনের কাছে একেকরকম। 

সিরিজের ‘আসল ভক্তদের’ মতে, ২০০৭ সালের দ্য বোর্ন আলটিমেটাম-এ বোর্নের গল্প চমৎকারভাবে শেষ হয়েছে। আবার, সাধারণ দর্শকের চোখে এটি শেষ হয় ২০১৬ সালের জেসন বোর্ন-এ, যা তাদের কাছে খানিকটা অসঙ্গতও মনে হয়েছে। আর যারা ২০১৯ সালে ইউএসএ নেটওয়ার্কের সিরিজ ট্রেডস্টোন দেখেছেন, তাদের জন্য বোর্নের কাহিনীর সমাপ্তি সেখানেই। 

তাহলে বোর্নের কাহিনী চূড়ান্ত শেষটা মুলত হলো কোথায়?

কঠিন প্রশ্ন—তবে জেসন বোর্নের চরিত্রের কাহিনী হয়তো কখনো শেষ হবে না। চলতি সপ্তাহে, এনবিসি ইউনিভার্সাল রবার্ট লুডলামের বোর্ন এবং ট্রেডস্টোন গল্পের প্রকাশনা-বহির্ভূত সমস্ত অধিকার চিরস্থায়ীভাবে কিনে নিয়েছে।

এই ‘বড়’ চুক্তির ফলে বোর্ন এখন জস, জুরাসিক ওয়ার্ল্ড এবং মিনিয়নস-এর মতো ইউনিভার্সাল পরিবারের অংশ। ইউনিভার্সালের প্রেসিডেন্ট পিটার ক্রেমার বলেছেন, ‘ভবিষ্যতেও নতুন নতুন গল্পের মাধ্যমে বোর্নের জগৎ দর্শকের কাছে পৌঁছে যাবে।’

কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির যদি নতুন অনুপ্রেরণার প্রয়োজন হয়, তবে সেটি বোর্ন। প্রথম তিনটি সিনেমা নিঃসন্দেহে অসামান্য হলেও এরপরের সিনেমাগুলোতে কিছুটা উত্থান-পতন দেখা যায়। 

২০১২ সালের দ্য বোর্ন লিগ্যাসি–তে ম্যাট ডেমন ছিলেন না, এবং সেই সময়ে যেন পৃথিবীর সব ফ্র্যাঞ্চাইজিই জেরেমি রেননারকে নতুন মুখ হিসেবে আনার চেষ্টা করছিল। ২০১৬ সালের জেসন বোর্ন-এ পল গ্রিনগ্রাস ও ম্যাট ডেমন বোর্নকে একটু চটুল ‘নাইটক্লাব বাউন্সার’এর মতো দেখানোর চেষ্টা করেছিলেন। আর ট্রেডস্টোন-এ বোর্নকে তো পুরোপুরি বাদ দিয়ে এক সিজনের পরই সিরিজটি বন্ধ হয়ে যায়।

যদিও ফ্র্যাঞ্চাইজির গত কয়েক দশক কিছুটা অস্থির ছিল, তবুও মনে রাখা জরুরি যে শুরুতে বোর্ন কতটা প্রভাবশালী ছিল। ২০০২ সালে দ্য বোর্ন আইডেন্টিটি মুক্তির সঙ্গে সঙ্গে এর বাস্তবসম্মত অ্যাকশন অন্যান্য একই ধরনের সিনেমাগুলোকে হালকা ও পুরনো মনে করিয়ে দিয়েছিল, এমনকি আয়ের দিক থেকে বোর্নকে দুই গুণে ছাড়িয়ে যাওয়া জেমস বন্ডের ডাই অ্যানাদার ডে-কেও। 

এখন চলছে ম্যাট ডেমনকে ফিরিয়ে আনার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা। জো বার্টনের একটি স্ক্রিপ্ট লেখা হয়েছে, তবে তা এখনও অনুমোদিত হয়নি। 

তবুও চরিত্রের সম্ভাবনা সীমাহীন। রবার্ট লাডলম ২০০১ সালে মারা যাওয়ার আগে তিনটি বোর্ন বই লিখেছিলেন, এরপর অন্যান্য লেখকের হাত ধরে আরও অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে। হতে পারে এই বইগুলোর—যেমন ২০০৯ সালের দ্য বোর্ন ডিসেপশন, ২০১৬ সালের দ্য বর্ন এনিগমা, ২০২৫ সালের দ্য বোর্ন ভেনডেটা বা আগামী দ্য বোর্ন রিভেঞ্জ—কাহিনী সিনেমায় রূপান্তরিত হবে। এত বই থাকায়, বোর্নকে নতুনভাবে, তরুণ অভিনেতার মাধ্যমে শুরু করতে হতে পারে সব কাহিনী নির্মাণের জন্য।

সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো বর্তমান চলচ্চিত্র প্রেক্ষাপটে জেসন বোর্নের জন্য স্থায়ী জায়গা নিশ্চিত করা। বোর্ন ট্রায়োলজি শেষ হওয়ার পর থেকে জেমস বন্ড জেফ বেজোসের কাছে বিক্রি হয়েছে, এমসিইউ উদ্ভব ঘটিয়েছে, বাজার দখল করেছে, কিন্তু ধীরে ধীরে তার একই ভারী বিষয়বস্তুর কারণে দর্শক ক্লান্তও বটে।  

দীর্ঘ সময়ের জন্য অ্যাকশন ব্লকবাস্টারের মূল আকর্ষণ ছিল মিশন: ইম্পসিবল, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাও পুরোপুরি সফল হয়নি।

সিনেমার অ্যাকশন জগৎ এখন অনেকটাই স্থবির। আমরা আবার সেই অবস্থায় ফিরে এসেছি যেখানে শতাব্দীর শুরুতে ছিলাম। নতুন কিছু নিয়ে আসা এবং খেলার নিয়ম বদলানো জেসন বোর্ন একবার ইতিমধ্যেই করেছেন। যদি তিনি অবসর থেকে ফিরে এসে আবার তা করতে পারেন, তবে বিনিয়োগটি পুরোপুরিই সার্থক।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *