আন্তর্জাতিক চিঠি দিবস ও হারিয়ে যাওয়া চিঠি লেখার শিল্প

প্রস্তুত করেছেন: আশরাফুল আলম

চিঠি লেখেননি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া আজকাল কঠিন। কেউ লিখেছেন পরীক্ষার খাতায়, কেউ লিখেছেন প্রিয়জনকে। বর্তমান সময়ে ইংরেজি কথাকার সমারসেট মম বলেছেন, “চিঠি লেখা সত্যিই এক হারিয়ে যাওয়া শিল্প।”

শেষ কবে চিঠি লিখেছেন বা পেয়েছেন—এই প্রশ্নের উত্তর অনেকেই দিতে পারবেন না। প্রযুক্তির কল্যাণে চিঠি লেখার প্রথা আজ প্রায় বিলুপ্ত।

ঘোড়ার ডাক প্রচলনের আগে চিঠি আদান-প্রদানের পদ্ধতি নিয়ে মতভেদ থাকলেও, আজকাল ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য ডাকঘরে যাওয়া খুব কম। এক সময় দূরে থাকা আপনজনের সঙ্গে যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম ছিল চিঠি। শুধু দূরের নয়, কাছের মানুষকেও মুখে বলতে না পারা কথা চিঠিতে সযত্নে লেখা হতো। প্রতিটি চিঠি নিজস্ব গল্প, আবেগ ও ইতিহাস বহন করত।

বর্তমানে ই-মেইল ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ক্ষুদে বার্তার ভিড়ে কাগজের চিঠি প্রায় হারিয়ে গেছে। সংক্ষিপ্ত বাক্য ও শব্দের এই যোগাযোগের ধরনকে ভাষাবিজ্ঞানীরা ‘টেক্সটস্পিক’ নামে অভিহিত করেছেন। কারও সঙ্গে কথা বলা প্রয়োজন হলে এখন দ্রুত বাংলা-ইংরেজি মিশিয়ে ইনবক্সে পাঠানো হয়।

আবেগও এখন আর শব্দে প্রকাশ পায় না। মেসেঞ্জার বা হোয়াটসঅ্যাপে ইমোজির মাধ্যমে আবেগ বোঝানো হয়। তবে আজ, রোববার (১ সেপ্টেম্বর), চিঠি দিবস উপলক্ষে কাগজ ও কলমের মাধ্যমে আপনার প্রিয়জনকে মনের কথা জানানো যেতে পারে।

‘আন্তর্জাতিক চিঠি দিবস’ প্রতিবছর আজকের দিনে পালিত হয়। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক রিচার্ড সিম্পকিন এই দিবসের সূচনা করেন। নব্বই দশকের শেষের দিকে তিনি দেশের বড় ব্যক্তিত্বদের চিঠি পাঠাতেন। বেশিরভাগ সময় তিনি সেগুলোর উত্তর পাননি, তবে কোনো চিঠির উত্তর পেলে তার আনন্দের সীমা থাকত না। সেই ভালোবাসা থেকেই ২০১৪ সালে তিনি চিঠি দিবস পালনের সিদ্ধান্ত নেন। তিনি চেয়েছিলেন চিঠি লেখার প্রথা আবার জীবন্ত হোক।

Share this post:

Tagged:

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *